রাজধানীর একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহ আল ফাহাদ। কয়েক বছর থেকেই নিয়মিত রোজা রাখছে সে। মায়ের হাতে তৈরি বাহারি খাবার দিয়ে ইফতার করতে খুব ভালো লাগে তার। কিন্তু গ্যাস না থাকায় এবার প্রথম রোজাতেই কোনো ইফতারি তৈরি হয়নি তার বাসায়।
বনশ্রীর বাসিন্দা হুমায়ুন কবিরও একই তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। সময় সংবাদকে তিনি বলেন, গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যা থেকেই গ্যাস ছিল না। সেহরির আগে কিছু সময়ের জন্য গ্যাস আসে। গ্যাসের চাপ কম থাকলেও রান্নার কাজ শেষ করা গেছে। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই গ্যাস নেই। আজও হয়তো বাইরে থেকে ইফতারি কিনে আনতে হবে।
শুধু আবদুল্লাহ আল ফাহাদ কিংবা হুমায়ুন কবির নন, গ্যাস না থাকায় বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে ইফতার ও সেহরি করেছেন রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার অধিকাংশ মানুষ। তীব্র গ্যাস সংকটে সেহরি ও ইফতারের সময় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা।
সাধারণত শীতকালে গ্যাসের চাপ এমনিতেই কম থাকে; কিন্তু গরমের শুরুতে গ্যাসের চাপ বাড়ার কথা থাকলেও এ মৌসুমে তেমন দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে বিকল্প জ্বালানির দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। ঘরে ঘরে পাইপলাইনে বিল গুনতে হলেও কাঙ্ক্ষিত গ্যাস না পাওয়ায়, রান্নার জন্য সিলিন্ডার চুলা, বিদ্যুচ্চালিত চুলা এমনকি লাকড়ির চুলাও ব্যবহার করতে হচ্ছে। ফলে গরমে একদিকে যেমন নাভিশ্বাস দশা, অন্যদিকে অগ্নিঝুঁকিতেও আছেন নগরবাসী। সংকট শিগগিরই কাটবে এমন কোনো আভাসও মেলেনি দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে।
রাজধানীর বাড্ডা, সাঁতারকুল, বেরাইদ, খিলবাড়িরটেক, নতুনবাজার, ফাঁসেরটেক, বসুন্ধরা, কালাচাঁদপুর, নর্দ্দা, কুড়িল, ভাটারা, ছোলমাইদ, বনশ্রী, রামপুরাসহ ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা জানান রমজানের প্রথম দিন থেকেই চরম গ্যাস সংকটে পড়েছেন তারা।
এ ছাড়া মিরপুর-১১ নম্বরের মদিনা নগর, আদর্শ নগর, সবুজ বাংলা, লালমাটিয়া, বাউনিয়াবাঁধ, ৫৪ প্লট, মিরপুর-১২, রূপনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট চলছে।
গ্যাস না থাকায় অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।
এদিকে রাজধানীর যেসব এলাকায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না, কিংবা গ্যাসের স্বল্প চাপের কারণে রান্না বিঘ্নিত হচ্ছে, সেসব এলাকায় এলপি গ্যাস ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।