ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানী ঢাকার প্রবেশদ্বার পোস্তগোলা সেতুর চলমান সংস্কারকাজের জন্য আজ শনিবার ও আগামীকাল রবিবার টানা ৪৮ ঘণ্টা তিনমুখী যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ঢাকামুখী ফরিদপুরের ভাঙ্গা, কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া ও ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে দোলাইরপাড় এলাকা দিয়ে সেতুকেন্দ্রিক সড়ক বন্ধ রয়েছে। ফলে এই দুই দিন সেতুতে কোনো ধরনের যান চলতে পারবে না। সেতুর সংস্কারকাজ শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার।
চলবে আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত। তবে সংস্কারকাজ চলার সময় সেতুতে হালকা ও মাঝারি যান চলার সুযোগ ছিল। কিন্তু আজ সেতু পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার পোস্তগোলা সেতুকেন্দ্রিক যানজট আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম ছিল।
মূলত গাড়ির চাপ কম থাকায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করেনি। এর প্রভাব পড়েছে বাবুবাজার সেতুতে। গাড়ির চাপে গতকাল সকাল থেকেই বেসামাল হয়ে ওঠে বাবুবাজার এলাকা। সেতুতে লম্বা যানজট তৈরি হয়।
বাবুবাজার সেতু এলাকায় দেখা যায়, গণপরিবহন, পণ্যবাহী যান ও ব্যক্তিগত গাড়ির সারি সেতুর ওপর। যানজটে আটকে থেকে অনেকেই বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হয়। গাড়ি না চলায় পণ্য হাতে নিয়ে সেতু পার হতে দেখা গেছে অনেক ব্যবসায়ীকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেতুতে যানজটও বাড়তে থাকে। যদিও সেতু থেকে নামার পর সড়ক তুলনামূলক স্বাভাবিক ছিল।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, মোট পাঁচ দিন সেতুর তিন পাশে সড়কপথ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে; এ মাসে দুই দিন ও পরের মাসে তিন দিন। আজ (গতকাল) শুক্রবার থাকায় অনেক বেশি গাড়ির চাপ ছিল না। তাই তীব্র যানজট হয়নি। তবে গাড়ির গতি তো কিছুটা কমেছেই।
এদিকে পোস্তগোলা সেতুর সংস্কারকাজ চলায় গাড়ির চাপ বেড়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই যানবাহনের লম্বা লাইন তৈরি হয় ফেরিঘাটে। গতকাল সকালের পর সেই লাইন ছোট হতে থাকে। গতকাল ঘাটে ৯টি ফেরি চলাচল করে। আবার সড়কপথের যানজটের ভোগান্তি এড়াতে বরিশালের যাত্রীরা বাসের পরিবর্তে লঞ্চে যাত্রা করছে। সংস্কারকাজ চলাকালে বিকল্প রুট বিবেচনায় যানবাহনগুলোকে হালকা ও ভারী—দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক বিকল্প পথ নির্ধারণ করে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
বরিশাল বিভাগের বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর জেলা; খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা এবং বৃহত্তর ফরিদপুর অংশের ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী জেলার যানবাহনকে ঢাকা মহানগরে ঢুকতে ও বের হতে দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, নবীনগর, আমিনবাজার, গাবতলী রুট অনুসরণ করতে হবে। সায়েদাবাদের পরিবর্তে গাবতলীতে যাত্রীবাহী বাস থামবে।
ঢাকা বিভাগের অন্য জেলা (ঢাকা-আংশিক), মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইলে (আংশিক) যানবাহন যাতায়াতে দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, নবীনগর, বাইপাইল, চন্দ্রা, ভোগড়া চৌরাস্তা হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ব্যবহার করতে হবে। রাজশাহী, রংপুর বিভাগমুখী যানবাহনকে লালন শাহ সেতু (কুষ্টিয়া, পাবনা) ব্যবহার করে চলাচল করতে হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগ ও টাঙ্গাইল জেলায় (আংশিক) যাতায়াতে লালন শাহ সেতু (কুষ্টিয়া, পাবনা) ও বঙ্গবন্ধু সেতু ব্যবহার করতে হবে। সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যানবাহন চলাচলে দৌলতদিয়া, পাটুরিয়াা, নবীনগর, বাইপাইল, চন্দ্রা, ভোগড়া চৌরাস্তা হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ব্যবহার করতে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগে যাতায়াতে পদ্মা সেতু হয়ে শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ, মুক্তারপুর সেতু, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু, মদনপুর রুট ব্যবহার করতে হবে। অথবা শরীয়তপুর, চাঁদপুর রুটের ফেরি ব্যবহার করতে হবে।