পবিত্র মাহে রমজানের বিশেষ ইবাদত হলো তারাবির নামাজ। এই নামাজ প্রতিদিন এশার ফরজ ও সুন্নত নামাজের পর এবং বিতরের আগে আদায় করা হয়।
২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, গুরুত্বের দিক থেকে ওয়াজিবের কাছাকাছি। ওজর বা অপারগতা ছাড়া তারাবির নামাজ পরিত্যাগ করা বড় গুনাহ।
তারাবির ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ বহু হাদিস রয়েছে।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহপাক তোমাদের ওপর রমজান মাসের রোজা ফরজ করেছেন এবং আমি মাহে রমজানে মাসব্যাপী আল্লাহর ইবাদতে দাঁড়ানো তোমাদের জন্য সুন্নাত হিসেবে নির্ধারণ করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি এ মাসে রোজা পালন করবে এবং আল্লাহর সামনে ইমান ও আন্তরিকতাসহ দাঁড়াবে, সে তার গুনাহ থেকে সেদিনের মতোই নিষ্কৃতি লাভ করবে, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল’। (নাসায়ি প্রথম খণ্ড, ২৩৯ পৃষ্ঠা)।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়বে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বোখারি, হাদিস নং : ৩৬)।
হজরত আবুজর গিফারী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলে করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে তারাবি নামাজ পড়ল, ইমাম প্রস্থান করা পর্যন্ত (জামাতে নামাজ সমাপ্ত করে গেল) তার কিয়ামে লাইল (রাত জাগরণের সওয়াব পূর্ণরূপে) লিখিত হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৬)।
তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম: এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। আর এ নামাজকেই ‘তারাবির নামাজ’ বলা হয়।
তারাবির জামাতে অংশ নিতে দেরি হওয়ার কারণে যদি কারও তারাবির জামাত থেকে কিছু রাকাত ছুটে যায় তাহলে বিতরের নামাজের পর তা আদায় করে নেবে।
ব্যস্ততার দরুণ অনেকেই নির্ধারিত সময়ে তারাবির নামাজের জন্য মসজিদে যেতে পারেন না। আবার অনেককে দেখা যায়, তারাবির নামাজ কয়েক রাকাত পড়ার পর মসজিদে যাচ্ছেন।
এমন মুক্তাদির জন্য এশা ও তারাবির নামাজ আদায়ের নিয়ম হলো- প্রথমে এশার ফরজ ও সুন্নত আদায় করা। পরে ইমামের সঙ্গে তারাবির নামাজে অংশ নেওয়া। তারাবির জামাত শেষে ইমামের সঙ্গে বিতর নামাজও জামাতে পড়ে নেওয়া। এরপর শুরুতে ছুটে যাওয়া তারাবির বাকি নামাজ আদায় করা।
তবে কোনো কারণে তারাবির নামাজ পুরোটাই ছুটে গেলে সম্ভব হলে এবং রাতে সময় পেলে তারাবি পড়ে নেওয়া উত্তম। কিন্তু তারাবির সময় তারাবির নামাজ পড়তে না পারলে পরবর্তীতে আর কাজা করতে হবে না।
পরবর্তীতে কেউ তারাবির নামাজের কাজা পড়লে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। তারাবি নামাজের কাজা বলে গণ্য হবে না।