বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না শিল্পীর কাছের মানুষেরা। তাই হঠাৎ তার মৃত্যুর খবরে দিশেহারা হয়ে মাঝরাতে শিল্পীর বাড়িতে ছুটে যান নায়ক ফেরদৌস, তারিনসহ শুভাকাঙ্ক্ষিরা।
বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সাদি। এরপর দীর্ঘ সময় দরজা বন্ধ থাকা ও ডাকে সাড়া না পাওয়ায় বিচলিত হয়ে পড়েন সাদির ছোট ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ। এরপর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সল্লিমুল্লাহ রোডের বাসার দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সাদির মরদেহ।
শিল্পীকে দ্রুত নেয়া হয় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বাগতিক লোহানী তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।
নিজের প্রতি ক্ষোভ আর মাকে হারানোর বেদনা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবারের সন্তান রবীন্দ্রসংগীতের জনপ্রিয় এ শিল্পী।
মৃত্যুর খবর শুনে শিল্পীর বাড়িতে ও হাসপাতালে ছুটে যান ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন ও নায়ক ফেরদৌসও। শিল্পী সম্পর্কে অভিনেত্রী ঈশিতার কাছে কিছু জানতে চাওয়া হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কোনো কথাই বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।
অভিনেত্রী তারিন কেঁদে কেঁদে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু আসলে কারোরই কাম্য নয়। আর সে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু যদি হয় কাছের কোনো মানুষের, তাহলে সেটা ভাষায় বোঝানো আসলে কঠিন। আমি শুধু এটুকুই বলব, সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
নায়ক ফেরদৌস বলেন, সাদি ভাই শুধু একজন শিল্পী না, তিনি আমার পরিবারের অংশ। আমার একজন ফিলোসফার, বন্ধু। তার আত্মার জন্য দোয়া করি। আমি সবাইকেও তার জন্য দোয়া করতে বলব। তার গানের মাঝেই তিনি চিরদিন বেঁচে থাকবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সলিমউল্লাহর সন্তান সাদি কিশোর বয়সে বাবা হারানোর বেদনা ভুলে ছিলেন মাতৃস্নেহেই। কিন্তু গত বছর মাও যখন না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তখন আর নিজেকে সামলাতে পারেননি জনপ্রিয় এ সংগীত ব্যক্তিত্ব।
মাকে হারানোর মাত্র ৮ মাসের মাথায় স্বেচ্ছায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৮ জুলাই মাকে হারানোর পর সবার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন গায়ক। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপরই হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন স্বেচ্ছা মৃত্যুতে।