জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেফতার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
জামিনের আবেদন নাকচ করে আম্মানের দুদিনের ও দ্বীন ইসলামের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান জানান।
এর আগে সোমবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে একটি সাদা প্রাইভেটকার করে তাদের আদালতে হাজির করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
এরপর মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় তাদের আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমানের কক্ষে রাখা হয়।
বেলা ১১টা ২০ মিনিটে তাদের কুমিল্লার বিচারিক হাকিম-২ নম্বর আমলি আদালতে হাজির করে আত্মহত্যার ‘মূল প্ররোচনাকারী’ রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের জন্য পাঁচদিনের ও দ্বীন ইসলামের জন্য দুদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মজিবুর রহমান জানান।
শুনানি শেষে আম্মানের দুদিনে ও দ্বীন ইসলামের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক।
এছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য ও মামলার অগ্রগতি বিষয়ে জানাতে পুলিশের প্রতি আদালত নির্দেশ দিয়েছে বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান জানান।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার।
এর আগে নিজের ফেইসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তার এমন মৃত্যুর জন্য সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন।
আম্মান তাকে অনলাইন ও অফলাইনে হুমকি দিতেন। এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টরকে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনিও হুমকি ধমকি দিয়েছেন- আত্মহত্যার আগে এমন অভিযোগের কথা লিখে গেছেন অবন্তিকা।
এদিকে এ ঘটনায় শুক্রবার রাত থেকেই বিক্ষোভ শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবন্তিকার সহপাঠী ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকালে রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন দ্বীন।
এদিন রাতে আম্মান ও দ্বীনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এতে দুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়।
রাতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে।
পরে রোববার রাতে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে দুইজনকে কুমিল্লায় নিয়ে আসেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবু তাহের বলেন, আমরা চাই না নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হোক।