সৃষ্টির সেরা হল মানব জাতি। যাদের কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আর এই মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা নিজের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে ভালো মন্দ ন্যায়-অন্যায় বিচার বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মানব সমাজে এই মানুষগুলোর জীবন নিয়ে থাকে অনেক স্বপ্ন লক্ষ্য উদ্দেশ্য । কেউ হতে চায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক ও গবেষক । আবার কেউ হতে চায় স্রষ্টার সৃষ্টির সেবা করে মানবতার কল্যাণ নিজে কে নিয়োজিত করে মানব মনে নিজেকে চির স্মরণীয় বরণীয় করে অন্যের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে। যেন মৃত্যুর পরও অসহায় আর্ত মানবতার কল্যাণে সমাজের অবহেলিত অধিকার বঞ্চিত নিরপরাধ মানুষগুলোর খাদ্য বস্ত্র , শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মত মৌলিক অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে স্রষ্টার নিকট হতে সৃষ্টির সেবার প্রতিদান পাওয়া যায়।
চায় নিজেকে আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশী পরবর্তী প্রজন্ম তথা সমাজ ও রাষ্ট্র তথা দেশ ও জাতি যেন তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তাদের হৃদয়ের আকাশে চির স্মরণীয় করে রাখে। আর এতেই তার জীবন হবে ধন্য। এমনই একজন সমাজসেবক ও মানবাধিকার কর্মী নির্যাতিত নিপীড়িত অসহায় আর্ত মানবতার চিৎকারে সাড়া দিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন । নাম তার মোঃ রেজাউল করিম। পিতা মোঃ ওসমান গনি । মাতা জাহানারা বেগম। বগুড়া জেলার ধুনট থানার অন্তর্গত পূর্বভরনশাহী গ্রামে এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৮২ সনে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ধনুট এন ইউ পাইলট হাই স্কুলে মাধ্যমিক পড়ালেখা করেন এবং ১৯৯৭ সনে এসএসসি ও ১৯৯৯ সনে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন এবং ২০০৪ সনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে বিএ অনার্স পাশ করেন।
ছাত্র জীবন থেকেই তিনি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে অসহায় মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করে তিনি সর্বপ্রথম চিন্তা করেন শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেই চলবে না । তিনি ভাবতে থাকেন আশে পাশের অসহায় গরিব ছিন্নমূল মানুষের বিভীষিকাময় দুর্দশা লাঘবে কিভাবে কাজ করা যায়। ভাবতে থাকেন জাতি রাষ্ট্র তথা গোটা বিশ্বে কম বেশি ধর্ষণ যৌন নির্যাতন ও অপরাধের ভয়াবহ চিত্র দেখে।
আমাদের এই ছোট্ট সবুজ সোনার বাংলাদেশেও শিশু ধর্ষণ ও অপহরণ, হত্যা,গুম-গুন, পুলিশি নির্যাতন, মিথ্যা মামলার হয়রানি,ক্ষমতার অপব্যবহার আমলাদের দৌরাত্ম দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্য,দলীয় সন্ত্রাস অন্যায় অত্যাচারে টৈ-টুম্বর চারদিকে।
তিনি চিন্তা করে দেখেন এই অন্যায় অবিচার প্রতিরোধে রাষ্ট্র তথা সারা বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার জন্য একটি সামাজিক সুরক্ষা তৈরি করার জন্য যে কোনো ভালো সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কোন বিকল্প নাই। তার চিন্তা এবং পরিকল্পনা গুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ( আমাসুফ ) এ যোগদান করে সাধারন সদস্য পদ লাভ করেন। সেখান থেকে শুরু তার মানবাধিকার সংগঠনের কাজ বা হাতে খড়ি। তিনি নিজেই নিজের নিকট অঙ্গীকারবদ্ধ হন যেভাবেই হোক ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশের তরুণ তরুণী, যুবক যুবতী, ছাত্র শিক্ষক সহ সকল শ্রেণীর পেশার মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে হবে।
যে সকল মানুষের প্রতি বিভিন্ন গোষ্ঠী অন্যায় অবিচার জুলুম নির্যাতনের স্টিমরোলার চাপিয়ে ন্যূনতম সুবিচার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে সেই সকল নির্যাতিতদের মাঝে ছড়িয়ে দেন যে আমরা সবাই যদি যার যার অবস্থান থেকে মানবতার কল্যাণে সমাজের অসহায় সুবিধা বঞ্চিত মানুষের প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি তাহলে এই সমাজ ও রাষ্ট্র তথা গোটা বিশ্ব বদলে যেতে বাধ্য হবে। তাই তিনি নিজের জীবন ও কর্মকে অধিকার হারা নির্যাতিত মানবতার কল্যাণে নিবেদন করেন।
২০২১ সনে তিনি আমাসুফ এর পদোন্নতি লাভ করে নির্বাহী সদস্য হন । ২০২২ সালে কো-অর্ডিনেটর , ২০২৩ সালে চীফ কো-অর্ডিনেটর এবং ২০২৪ সালে থেকে তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেনI এছাড়া তিনি সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের ২০২০- ২০২১ সালের ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটিতে নির্বাহী সদস্য হিসেবে যোগদান করেন পরবর্তীতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি দীর্ঘদিন থেকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।ইতিমধ্যে তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি কর্তৃক প্রবর্তিত মানবাধিকার বিষয়ক ৩১ টি কোর্স সম্পন্ন করেন এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর জেনারেল সেক্রেটারি এগনেস কালামার্ড স্বাক্ষরিত ১৭ টি সার্টিফিকেট অর্জন করেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি লন্ডনে অবস্থিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন এবং মানবাধিকার বিষয়ক কর্মশালায় যোগদান করেন।
একই সালের নভেম্বর মাসে তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল থাইল্যান্ড কর্তৃক আমন্ত্রিত হয়ে “রাইট ফর রাইট” ( অধিকারের জন্য লেখা ) প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন দেশের মানুষের মানবাধিকার বিষয়ে তিনি উক্ত অনুষ্ঠানে জোরালো বক্তব্য রাখেন।
২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের আমন্ত্রণে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সদর দপ্তর কর্তৃক আয়োজিত সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল ( এসডিজি ) শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি কিভাবে মানবাধিকার বিষয় উন্নয়ন করা যায় সে ব্যাপারে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন ।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সরকারের বিমাতা সুলভ আচরণের ব্যাপারে তিনি বিভিন্ন সময় সোচ্চার হয়ে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও সামাজিক মাধ্যমে এর তীব্র প্রতিবাদ করেন । এজন্য তাকে সরকার সমর্থিত বিভিন্ন ব্যক্তি দ্বারা বিভিন্ন রকম হুমকিধামকির শিকার হতে হয় ।
অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল না হয়েও তিনি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। অসহায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যাপারে তিনি সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ঐ সমস্ত শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া তিনি অসুস্থ এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল রোগীদের চিকিৎসার ব্যাপারে নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে থেকে বিভিন্ন রকম মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
করোনা কালীন সময়ে তার সামাজিক কার্যক্রম এবং মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য সমাজের মানুষের কাছে তিনি একজন মানবিক মানুষ রূপে পরিচিতি পেয়েছেন। মানুষকে সম্মান ও আপ্যায়ন করা তার চরিত্রের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।
তার এই মানবিক সেবার কার্য্যক্রমের জন্য বিভিন্ন সংস্থা তথা গনমাধ্যমে ভুয়সী প্রশংসা করে গুরুত্ব সহকারে বিভিন্ন আর্টিকেল ও সংবাদ প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রাপ্য বিভিন্ন সম্মাননা ও পুরস্কারের ছবি এবং সংবাদ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়।
সর্বপ্রথম তিনি তার মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৩ সনের সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ উত্তরা হোয়াইট হল অডিটরিয়ামে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি’র নিকট হতে “বেস্ট এক্টিভিস্ট অফ হিউম্যান রাইটস” বিষয়ে ভিন্নমাত্রার সম্মাননাএওয়ার্ড ২০২৩ অর্জন করেন। পুরস্কারের এই ছবি ও নিউজ বাংলাদেশের জাতীয় গণমাধ্যম দ্য ডেইলি অবজারভার, দৈনিক নয়া দিগন্ত, দৈনিক মুক্ত খবর, খবর প্রতিদিন, দৈনিক প্রতিদিনের খবর, দ্য মুসলিম টাইম ও দ্য বিজনেস আই সহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ফলাওভাবে প্রকাশিত হয়।
একই বছরে তিনি বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক হিসেবে মাসিক “ধানসিঁড়ি সাইনিং পার্সোনালিটি অ্যাওয়ার্ড” পান। এপর্যন্ত তার সবচেয়ে বড় অর্জন হল জাপানের “ওয়ার্ল্ড মার্শাল কাউন্সিল” এবং থাইল্যান্ডের “ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোম্যাটিক কোঅপারেটিভ অর্গানিজেশন” কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড মিট -২০২৪ এ “ওয়ার্ল্ড বেস্ট পারসন আওয়ার্ড-২০২৪” নির্বাচিত হওয়া যা তার জন্য এবং বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবের বিষয়।
সবশেষে এই মহান গুনি মানুষটি মানবতা ও মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা তার স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন আমি চাই মানবতার কল্যাণে আমৃত্যু কাজ করে যেতে এবং একটি সুখী সুন্দর ইনসাফপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সমাজ রাষ্ট্র তথা সারা বিশ্বময় ধর্ম বর্ণের ঊর্ধে উঠে মানবতার কল্যাণে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসুক।
আর তবেই আমরা স্রষ্টার নিকট হতে সৃষ্টির সেবায় মহৎ কাজের জন্য পুরস্কৃত হব ইনশাল্লাহ।